লিওনেল মেসির জীবন কাহিনী কি 2024
লিওনেল মেসির জীবন কাহিনী অনুপ্রেরণার এক অসাধারণ গল্প। আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে জন্ম নেওয়া মেসি ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি অনুরাগী ছিলেন, তবে তার শৈশবকাল কঠিন ছিল, কারণ তার একটি গ্রোথ হরমোন ডেফিসিয়েন্সির সমস্যা ধরা পড়েছিল, যা তার শারীরিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করেছিল। চিকিৎসার খরচ তার পরিবারের পক্ষে বহন করা কঠিন হয়ে পড়ছিল।
শৈশব ও শুরু:
মেসি ২৪ জুন ১৯৮৭ সালে আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি খুব ছোট আকৃতির ছিলেন, যা তার ফুটবল ক্যারিয়ারের জন্য সমস্যা হতে পারত। তবে ১৩ বছর বয়সে বার্সেলোনা ক্লাব তার প্রতিভা দেখে তাকে স্পেনে নিয়ে যায় এবং তার চিকিৎসার খরচ বহন করার সিদ্ধান্ত নেয়। বার্সেলোনার ইয়ুথ একাডেমি "লা মাসিয়া" তে যোগ দেওয়ার পর মেসি দ্রুতই সবার নজরে আসেন।
বার্সেলোনায় তার উত্থান:
২০০৪ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে মেসি বার্সেলোনার প্রথম দলে অভিষেক করেন। এরপর থেকে মেসির খেলা এতই চমৎকার ছিল যে, খুব দ্রুতই তিনি দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন। বার্সেলোনার হয়ে তিনি অসংখ্য শিরোপা জিতেছেন, যার মধ্যে ১০টি লা লিগা, ৪টি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং ৭টি কোপা দেল রে শিরোপা রয়েছে।
ব্যক্তিগত রেকর্ড:
মেসি তার ক্যারিয়ারে ৭ বার ব্যালন ডি'অর জিতেছেন, যা ফুটবলের সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিগত পুরস্কার। তিনি বার্সেলোনার হয়ে ৬৭২টি গোল করেছেন, যা ক্লাবের ইতিহাসে সর্বাধিক।
আর্জেন্টিনা জাতীয় দল:
মেসি দীর্ঘদিন আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে সাফল্যের জন্য লড়াই করেছেন। তবে ২০২১ সালে তিনি কোপা আমেরিকা জিততে সক্ষম হন। তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য আসে ২০২২ সালে, যখন তিনি আর্জেন্টিনার হয়ে ফিফা বিশ্বকাপ জেতেন, যা তার ফুটবল জীবনের এক বিশাল অর্জন।
পিএসজি ও ইন্টার মায়ামি:
২০২১ সালে মেসি বার্সেলোনা ছেড়ে প্যারিস সেন্ট-জার্মেইন (পিএসজি)-তে যোগ দেন। সেখানে তিনি দুই মৌসুম কাটিয়ে ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টার মায়ামি ক্লাবে যোগ দেন।
ব্যক্তিগত জীবন:
মেসি ২০১৭ সালে তার শৈশবের ভালোবাসা আন্তোনেলা রোকুজ্জোর সাথে বিয়ে করেন। তাদের তিন সন্তান আছে – থিয়াগো, মাতেও, এবং সিরো। তিনি ফুটবলের বাইরে তার পরিবার ও ফাউন্ডেশনের কাজের সাথে জড়িত।
মানবিক কাজ:
মেসির ফাউন্ডেশন শিশুদের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে। তিনি নিয়মিত বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগে সহায়তা করেন।
মেসির প্রভাব:
মেসির ক্যারিয়ার কেবল ফুটবলেই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী খেলার উন্নতিতে অবদান রেখেছে। তার কৌশল, প্রতিভা, এবং খেলায় তার প্রতিশ্রুতি তাকে ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।